খোলা কলাম

23-08-2016 10:55:03 AM

ঘুরে আসুন ফুকতাল, লাদাখ

newsImg

সোজা দেওয়ালের মতো পাহাড়, আশপাশ একেবারে শুনশান। কোনও বাড়িঘর, মানুষজন চোখে পড়ে না। মনে হয় যেন পৃথিবীর শেষ সীমান্ত পৌঁছে গেছেন। আর ঠিক এখানেই আছে অসাধারণ এক গুম্ফা বা মনাস্ট্রি। আমরা বলছি লাদাখের ফুকতাল মনাস্ট্রির কথা। একেবারে জনমানবিচ্ছিন্ন বলেই একে ‘আইসোলেটেড মনাস্ট্রির’ খেতাব দেওয়া হয়েছে। যাঁরা জ়ানসকারে ট্রেক করেছেন তাঁরা হয়তো এর নাম শুনে থাকবেন। তিব্বতীয় ধর্মস্থান হিসেবে ফুকতালের একটা আলাদা পরিচিত আছে। ১২ শতকে গাংসেম শেরাপ সাম্পো এই মনাস্ট্রি বানিয়েছিলেন। দূর থেকে দেখতে অনেকটা মৌচাকের মতো লাগে। স্থানীয় ভাষায় ফুকতালের অর্থ গুহা। এই মনাস্ট্রি অবশ্য দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিল। কারণটা অবশ্য এর দুর্গম অবস্থান। হাঙ্গেরিয়ান ওরিয়েন্টালিস্ট আলেক্সানডার সোমা দ্য করস প্রথম আবিষ্কার করেন। ১৮২৬-১৮২৭ সালে উনি এখানে আসেন এবং বেশ কিছুদিন থাকেন। আর তারপর থেকেই তিব্বতীয় ভিক্ষুকদের যাতয়াত শুরু হয় ফুকতালে। মাটি ও কাঠে দিয়ে তৈরি এই ধর্মস্থানে চারটে প্রার্থনা ঘর ও একটি লাইব্রেরি আছে। প্রায় ৭০ জন ভিক্ষুক এখানে থাকে। ফুকতালে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা ট্রেকিং। পারনে ব্রিজ থেকে শুরু করে পাদম-মানালি রুট ধরে পৌঁছতে হয় ফুকতালে। পায়ে হেঁটে আট ঘণ্টা সময় লাগে। রাস্তায় তিব্বতীয় ভাষায় খোদাই করে বগু পাথর দেখতে পাবেন। তবে গুম্ফায় পৌঁছে ক্লান্তি চলে যায়। অদ্ভুত শান্তি আছে এখানে। ফুকতালের আশেপাশে অবশ্য কোনও থাকার জায়গা নেই। গেস্ট হাুজ়, হোটেল তো দূরস্থান, বাড়িঘরও দেখতে পাবেন না। তাই ভরসা একমাত্র গুম্ফাই। ভিক্ষুদের সঙ্গে কথা বলে গুম্ফায় তাকার ব্যবস্থা করা যায়। খাওয়াদাওয়ার অপশনও খুব কম। মনাস্ট্রিতে ভিক্ষুদের করা খাবার খেতে পারেন। সঙ্গে অবশ্য টুকটাক খাবারের প্যাকেট রাখতে পারেন। জুলাইয়ের মাঝামাধি থেকে সেপ্টেম্বর ফুকতাল যাওয়ার ভাল সময়। বাকি সময় প্রচন্ড বরপ পড়ে। ফলে কার্গিল পাদম রাস্তা পুরো বন্ধ থাকে।