বাংলাদেশ | শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ | ৫ বৈশাখ,১৪৩১

জনগণ / তত্তাবদায়ক সরকার

29-10-2016 10:01:37 AM

রাজাকার পুত্র হেলালের কর্মকান্ডে মধুখালীর মেগচামীবাসী অতিষ্ঠ: আ.লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবী

newsImg

তানজিল শরীফ : ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামের মৃত নজ শেখের পুত্র হেলাল শেখের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মেগচামী বাসী।শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে মধুখালী- বালিয়াকািন্দ সড়কের মেগচামী মৃধা বাজার এলাকায় মানববন্ধন ও খান ট্রেডার্সে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মেগচামী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন এক লিখিত অভিযোগে জানান, মৃত নজ শেখ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তৎকালিন সময়ে বহু অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।সে সময় হতেই তাকে নজ রাজাকার হিসেবে এলাকার লোক চিনত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঐ পরিবারের লোকজনকে মানুষ ঘৃনার চোঁখে দেখত। দেশে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসলে ঐ রাজাকার পরিবারর সকল লোকজন বিএনপিতে যোগ দেয় এবং দেশ বিরোধী কর্মকান্ড চালাতে থাকে। ঐ পরিবারের লোকজন এখনও বিএনপিতে রাজনীতি করে চলেছে।

এ দিকে রাজাকার নজ’র পুত্র হেলাল ২০১৪ সালে মেগচামী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হবার পর এলাকার লোকজনের রোষানলে পরে। এ থেকে বাঁচতে হেলাল নিজ স্বার্থ হাসিল করতে অত্র এলাকার মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব মোঃ আব্দুর রহমানকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত করে মেগচামী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করে।

ঐ যোগদান অনুষ্ঠানে হেলালের পরিবারের কোন লোকজন উপস্থিত ছিল না। পরিবারের সদস্যরা হেলালকে আওয়ামীলীগে যোগদান কোন ভাবে মেনে নিতে পারেনি। এতে হেলালের নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য যোগ দিয়েছে মর্মে ঘটনা প্রকাশ পায়। তখন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা টুকু আব্দুস সালাম মোল্যাসহ সকল লোকজনের চাপের মুখে পড়ে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলনের সময় সে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদে স্থান করে নেয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই হেলাল মেগচামী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগকে দ্বিধা বিভক্ত করে ফেলে। চলে আসে গ্রুপিং। এক পর্যায়ে মেগচামী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের একটি সভায় মেগচামী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বাবু প্রভাষ সরকারকে মাথা ফাটিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।এতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করতে থাকে। শুরু করে বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, সহকারি প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার। শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে সে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ঐ টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন একটি ভবন করার কথা তুললে সে শিক্ষকদের দেখে নেবার হুমকি দেয় এবং নিয়োগের টাকা বিভিন্ন কাজে ব্যয় করেছে বলে শিক্ষকদের জানায়।এরই মধ্যে রাজাকার পুত্র হেলাল বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের খালকুলা গ্রামের একটি কন্যার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসীর চাপের মুখে কন্যাটিকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এ দিকে হেলালের পূর্বের স্ত্রী ও শশুর বাড়ীর লোকজনের চাপের মুখে দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়। এসকল কর্মকান্ড বিদ্যালয়কে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যে ফেলে দেয়। কমতে থাকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। হেলালের কর্মকান্ডে অসন্তোষ হয়ে বিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য গণিত শিক্ষক নারদ কুমার বাছার বিদ্যালয় থেকে ইস্তফা দিয়ে অন্যত্র প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকুরি করছেন।তার অন্যত্র চাকুরি করার কারন ছিল প্রধান শিক্ষক নিয়োগে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বাণিজ্য।এ সকল ঘটনা মধুখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ ,স্থানীয় আওয়ামীলীগ সহ এলাকার সকল লোকজনেরই জানা। এক পর্যায়ে দাবী আসে রাজাকার পুত্র হেলালের বহিষ্কার। এরই মধ্যে বর্তমান নাম মেগচামী আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ এর ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের তফসীল ঘোষনা করলে হেলাল পুনরায় সভাপতি হবার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেছে।কারন হিসেবে জানা যায়, ব্যাক ডেটে সে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে রেখেছে শিক্ষক নিয়োগের জন্য। সভাপতি পদটি হাতছাড়া হয়ে গেলে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে সে বঞ্চিত হবে। সভাপতি পদটি পুনরায় ধরে রাখার জন্য সে আওয়ামীলীগ নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এমনকি এই এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মোঃ আব্দুর রহমান এর কাছেও ধর্না দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। রাজাকার পুত্র হেলাল মধুখালী উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের সন্তান বর্তমান অর্থ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাবু শুধাংশ শেখর বিশ্বাস এর নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অফিস আদালতে তদবির ও নিজ স্বার্থ হাসিলের মত বিতর্কিত কর্মকান্ড করে চলেছে।এ সকল কর্মকান্ড শুধু আওয়ামলীগকেই ক্ষতি করছে না বরং স্থানীয় সকল লোকজনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. সাহেব আলী শেখের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে হেলালকে আওয়ামীলীগ থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার এবং সকল অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করা হয়েছে।এ বিষয়ে মেগচামী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আবুল কাশেম মৃধা জানান, হেলাল এর বাবা রাজাকার ছিল।সে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে যোগসাজস করে এলাকার বহু মানুষের ক্ষতি করেছে, অনেক নারীদের সম্ভ্রমহানী করতে পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছে। তার ছেলে হেলাল রাজাকারি কর্মকান্ড শুরু করেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাথে আলাপ করে বর্ধিত সভার মাধ্যমে বহিষ্কারের বিষয়ে সুপারিশ করা হবে।সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রজব আলী শেখ, মো. নাইবা শেখ, মো. আয়ুব শেখ, মেগচামী ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শফিকুর রহমান মোল্যা, ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম মৃধা, মো. মনিরুজ্জামান খান আলিনুর, মো. রইচ সরদারসহ এলাকার শতাধিক যুবক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।মধুখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মির্জা মনিরুজ্জামান বাচ্চু জানান, হেলাল এর পিতা দেশ বিরোধী ছিল তা আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি। আওয়ামীলীগে রাজাকার বা রাজাকার পরিবারের কোন স্থান দেওয়া হবে না। হেলালের বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। খুব শ্রীঘ্রই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহণ করবে।

  

খবরটি সংগ্রহ করেনঃ- আই-নিউজ২৪.কম
এই খবরটি মোট ( 2577 ) বার পড়া হয়েছে।
add

Share This With Your Friends